ঢাকা , রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ১৪ মাসে চার্জশিট হয়নি একটি মামলারও, ভোগান্তিতে বিচারপ্রার্থীরা Logo ভয়াবহ ‘সুনামি’র কবলে ইসরাইল! Logo ইতিহাস গড়ার প্রস্তুতি যেভাবে নিতে চলেছেন মুশফিক Logo সেই ছবি নিয়ে মুখ খুললেন সামিরা মাহি Logo ইসলাম হতে হবে মদীনার ইসলাম, সেটা জামায়াতে ইসলাম না : মনির হোসাইন কাসেমী Logo মুসুল্লিদের ৬০ বছরের ভোগান্তির অবসান ঘটাচ্ছেন ডিসি জাহিদুল ইসলাম Logo কাদিয়ানী অমুসলিম ঘোষণা দাবিতে ডিআইটিতে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo সোনারগাঁয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত গ্রেপ্তার Logo রূপগঞ্জে ফুটপাত দখলমুক্ত উচ্ছেদ যৌথ অভিযান Logo বন্দরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা, গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আবু জাফর আহমেদ বাবুল

ফতুল্লায় কোলের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ, ভিডিও ধারণ

ফতুল্লার গাবতলী এলাকায় কোলের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে গোটা রমজান মাস জুড়ে ধর্ষিতা ওই গৃহবধুকে ব্লাকমেইল করে একাধিকবার গণধর্ষণ করেছে।

সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল পূণরায় ধর্ষণ করলে ওই গৃহবধূ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এবং ঘটনাটি তার স্বামীকে জানায়। পরে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ফতুল্লা মডেল থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

শুক্রবার এ বিষয়ে জানতে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরীফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জানান। এবং আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য সর্বাত্মাক চেষ্টা চলছে।

ধর্ষিতার স্বামী লেগুনা চালক (২৪) জানিয়েছেন, তারা বেশ কিছুদিন ধরে গাবতলী এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বিগত রমজান শুরু হওয়ার আগে তার স্ত্রী (১৮) তার শিশু সন্তানকে নিয়ে ইসদাইর-গাবতলী লিংক রোড দিয়ে যাওয়ার সময় ইসদাইর বটতলা এলাকার আনোয়ারের ভাগিনা সজিব ওরফে বদনা সজিব, গাবতলী মাজার এলাকার কাসেম মিয়ার ছেলে রাকিব ওরফে মাইন, শফিক মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া নয়ন এবং নজরুল সহ অজ্ঞাত আরো দুইজন জোরপূর্বক ধরে নিয়ে তার শিশু সন্তানকে কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে।

এ সময় ধর্ষণকারীরা ধর্ষণের ভিডিও ধারন করে। এ সময় অপর এক নিরীহ ব্যক্তিকে ধরে এনে ব্ল্যাকমেইল করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা রেখে দেয় এবং বলে ওই ব্যক্তি যদি এই ঘটনা কাউকে জানায় তাহলে এই মেয়ের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে বলে ফাঁসিয়ে দেবে। পরবর্তীতে গোটা রমজান মাস জুড়ে ওই ভিডিও ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গৃহবূধকে আরো কয়েক দফা গণধর্ষণ করে।

সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল তাকে পূনরায় একই আসামীরা গণধর্ষন করলে ওই দিন সে তার স্বামীকে জানায় এবং স্বামী-স্ত্রী ফতুল্লা মডেল থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করে। এই ঘটনায় গোটা গাবতলী ও ইসদাইর এলাকা জুড়ে তোলপাড় চলছে।

ধর্ষিতার স্বামী আরো জানিয়েছেন, ধর্ষণের সময় ওরা পৈচাশিকতায় মেতে উঠে এবং আমার স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তার সারা শরীরে ধর্ষণকারীদের কামড়ের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসী জনায়, গত ৯ এপ্রিল মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে আসামী ধরার জন্য পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। ওই দিন রাত দশটায় পুলিশ গাবতলী এলাকায় অভিযানে গেলে ওই এলাকার বিএনপি নেতা আবদুল্লা পুলিশকে মিসগাইড করে।

মামলায় পরিস্কার ভাবে কাসেমের পুত্র রাকিব হাসান মাইনের নাম লিখা থাকলেও আবদুল্লা পুলিশকে স্থানীয় রিটায়ার্ড স্কুল শিক্ষক হেলাল উদ্দিন গাজীর বাড়িতে নিয়ে যায়। কারণ হেলাল মাস্টারের ছেলের নাম রাকিবুল ইসলাম।

এ সময় আবদুল্লার সহায়তায় পুলিশ গিয়ে হেলাল মাস্টারের পরিবারকে টানা দুই ঘন্টা হেনস্তা করে বলে হেলাল মাস্টার জানান। এ সময় ওই এলাকার কুখ্যাত ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী বদনা সজিব সহ প্রকৃত অপরাধীদের ব্যাপারে ওয়ার্ড বিএনপির এই সাধারণ সম্পাদক পুলিশের কাছে সাফাই গায়।

এ সময় আবদুল্লা বলে বদনা সজিব ও তার সাঙ্গপঙ্গরা বিএনপি করে আর হেলাল মাস্টারের পরিবার আওয়ামী লীগ করে।

এ বিষয়ে অতি উৎসাহী আবদুল্লা পুলিশের সঙ্গে হেলাল মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত যায়। এতে প্রকৃত অপরাধীরা টের পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হেলাল মাস্টার ও তার পরিবার কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তবে তিনি বিএনপি সমর্থক হিসাবে এলাকায় পরিচিত।

অন্যদিকে ধর্ষণকারী বদনা সজিব সহ আসামীরাও বিএনপি বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো পদে নেই। তারা নানা অপকর্ম করার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতা অধ্যাপক মনির এবং আবদুল্লার শেল্টার নিয়ে থাকে। বিষয়টি পুরো এলাকাবাসী জানে।

ওদিকে গাবতলী এলাকাবাসী আরও জানায়, বদনা সজিবের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসীরা ওই এলাকায় ত্রাস হিসাবে পরিচিত। বিশেষ করে ছিনতাই, চুরি এবং মাদক ব্যবসার জন্য পরিচিত এই গ্রুপ। অথচ তার পরেও সম্প্রতি ফতুল্লা থানার সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা আবদুল্লা এদেরকে শেল্টার দেয়।

এবারের ঈদে অধ্যাপক মনিরের সাথে বদনা সজিবকে ফটো তুলে ফেসবুকে দিতে দেখা যায়। মূলত ৫ আগষ্টের পর বিএনপির এই দুই নেতার শেল্টার পেয়েই এই ভয়ংকর অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। এলাকাবাসী এই নির্মম গণ ধর্ষণের ন্যায় বিচার চায়।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

১৪ মাসে চার্জশিট হয়নি একটি মামলারও, ভোগান্তিতে বিচারপ্রার্থীরা

ফতুল্লায় কোলের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ, ভিডিও ধারণ

আপডেট সময় ১০:১২:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ফতুল্লার গাবতলী এলাকায় কোলের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে গোটা রমজান মাস জুড়ে ধর্ষিতা ওই গৃহবধুকে ব্লাকমেইল করে একাধিকবার গণধর্ষণ করেছে।

সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল পূণরায় ধর্ষণ করলে ওই গৃহবধূ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এবং ঘটনাটি তার স্বামীকে জানায়। পরে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ফতুল্লা মডেল থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

শুক্রবার এ বিষয়ে জানতে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরীফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জানান। এবং আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য সর্বাত্মাক চেষ্টা চলছে।

ধর্ষিতার স্বামী লেগুনা চালক (২৪) জানিয়েছেন, তারা বেশ কিছুদিন ধরে গাবতলী এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বিগত রমজান শুরু হওয়ার আগে তার স্ত্রী (১৮) তার শিশু সন্তানকে নিয়ে ইসদাইর-গাবতলী লিংক রোড দিয়ে যাওয়ার সময় ইসদাইর বটতলা এলাকার আনোয়ারের ভাগিনা সজিব ওরফে বদনা সজিব, গাবতলী মাজার এলাকার কাসেম মিয়ার ছেলে রাকিব ওরফে মাইন, শফিক মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া নয়ন এবং নজরুল সহ অজ্ঞাত আরো দুইজন জোরপূর্বক ধরে নিয়ে তার শিশু সন্তানকে কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে।

এ সময় ধর্ষণকারীরা ধর্ষণের ভিডিও ধারন করে। এ সময় অপর এক নিরীহ ব্যক্তিকে ধরে এনে ব্ল্যাকমেইল করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা রেখে দেয় এবং বলে ওই ব্যক্তি যদি এই ঘটনা কাউকে জানায় তাহলে এই মেয়ের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে বলে ফাঁসিয়ে দেবে। পরবর্তীতে গোটা রমজান মাস জুড়ে ওই ভিডিও ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গৃহবূধকে আরো কয়েক দফা গণধর্ষণ করে।

সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল তাকে পূনরায় একই আসামীরা গণধর্ষন করলে ওই দিন সে তার স্বামীকে জানায় এবং স্বামী-স্ত্রী ফতুল্লা মডেল থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করে। এই ঘটনায় গোটা গাবতলী ও ইসদাইর এলাকা জুড়ে তোলপাড় চলছে।

ধর্ষিতার স্বামী আরো জানিয়েছেন, ধর্ষণের সময় ওরা পৈচাশিকতায় মেতে উঠে এবং আমার স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তার সারা শরীরে ধর্ষণকারীদের কামড়ের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসী জনায়, গত ৯ এপ্রিল মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে আসামী ধরার জন্য পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। ওই দিন রাত দশটায় পুলিশ গাবতলী এলাকায় অভিযানে গেলে ওই এলাকার বিএনপি নেতা আবদুল্লা পুলিশকে মিসগাইড করে।

মামলায় পরিস্কার ভাবে কাসেমের পুত্র রাকিব হাসান মাইনের নাম লিখা থাকলেও আবদুল্লা পুলিশকে স্থানীয় রিটায়ার্ড স্কুল শিক্ষক হেলাল উদ্দিন গাজীর বাড়িতে নিয়ে যায়। কারণ হেলাল মাস্টারের ছেলের নাম রাকিবুল ইসলাম।

এ সময় আবদুল্লার সহায়তায় পুলিশ গিয়ে হেলাল মাস্টারের পরিবারকে টানা দুই ঘন্টা হেনস্তা করে বলে হেলাল মাস্টার জানান। এ সময় ওই এলাকার কুখ্যাত ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী বদনা সজিব সহ প্রকৃত অপরাধীদের ব্যাপারে ওয়ার্ড বিএনপির এই সাধারণ সম্পাদক পুলিশের কাছে সাফাই গায়।

এ সময় আবদুল্লা বলে বদনা সজিব ও তার সাঙ্গপঙ্গরা বিএনপি করে আর হেলাল মাস্টারের পরিবার আওয়ামী লীগ করে।

এ বিষয়ে অতি উৎসাহী আবদুল্লা পুলিশের সঙ্গে হেলাল মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত যায়। এতে প্রকৃত অপরাধীরা টের পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হেলাল মাস্টার ও তার পরিবার কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তবে তিনি বিএনপি সমর্থক হিসাবে এলাকায় পরিচিত।

অন্যদিকে ধর্ষণকারী বদনা সজিব সহ আসামীরাও বিএনপি বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো পদে নেই। তারা নানা অপকর্ম করার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতা অধ্যাপক মনির এবং আবদুল্লার শেল্টার নিয়ে থাকে। বিষয়টি পুরো এলাকাবাসী জানে।

ওদিকে গাবতলী এলাকাবাসী আরও জানায়, বদনা সজিবের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসীরা ওই এলাকায় ত্রাস হিসাবে পরিচিত। বিশেষ করে ছিনতাই, চুরি এবং মাদক ব্যবসার জন্য পরিচিত এই গ্রুপ। অথচ তার পরেও সম্প্রতি ফতুল্লা থানার সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা আবদুল্লা এদেরকে শেল্টার দেয়।

এবারের ঈদে অধ্যাপক মনিরের সাথে বদনা সজিবকে ফটো তুলে ফেসবুকে দিতে দেখা যায়। মূলত ৫ আগষ্টের পর বিএনপির এই দুই নেতার শেল্টার পেয়েই এই ভয়ংকর অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। এলাকাবাসী এই নির্মম গণ ধর্ষণের ন্যায় বিচার চায়।