ঢাকা , বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকা: ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা Logo নারায়ণগঞ্জ উদ্যোক্তা কল্যাণ গ্রুপ পরিবারের ২য় বর্ষ পদার্পণ উপলক্ষে চায়ের আড্ডা অনুষ্ঠিত Logo সিদ্ধিরগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের মাঝে চাল বিতরণ করলো আধাঁরে আলো প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা Logo বন্দরে লারিজ ফ্যাশন লিঃ মহিলা শ্রমিকের মৃত্যুতে মহাসড়ক অবরোধ Logo ঢাকা প্রেসক্লাবের সাধারণ পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত Logo বন্দরে খেলাফত মজলিসের উঠান বৈঠক Logo আবু জাফর আহমেদ বাবুলের পক্ষে লিফলেট বিতরণ করেন- মো. বরকতুল্লাহ Logo বন্দর বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার ২ Logo বন্দরে সাংবাদিকের মোটর সাইকেল চুরি মামলায় আজমীর গ্রেপ্তার Logo ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমলাপাড়া পঞ্চায়েত কমিটির: হানিফ সরদার ও হীরা সরদারের উদ্যোগে

ভুল চিকিৎসায় সোনারগাঁও মেডিকেয়ার হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু

অপারেশন করার চিকিৎসকের সদন নেই। অপারেশন থিয়েটারেও নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। এছাড়া চিকিৎসকও অন্য বিভাগের। তারপরও অপারেশন করেছেন। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে রাসেল নামে এক রোগীর।

ঘটনাটি গত ৩০ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন দিবাগত রাতে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ঐতিহ্যবাহী গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড বা সোনারগাঁ সরকারি কলেজ সড়কের ডান পাশে জলিল প্লাজায় অবস্থিত “মেডিকেয়ার হাসপাতাল”এ ঘটেছে।

এ ঘটনার পর হাসপাতাল ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধাঁমাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলেও বিশ^স্ত একটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। খবরপেয়ে, ঘটনাস্থলে গেলে হাসপাতালের ভিতরে কর্মচারীদের দেখা গেলেও একাধিকবার কলিং বেল বাঁজালে এবং ডাকা-ডাকি করলেও কেউ কোন সাড়া দেয়নি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, রাসেল নামে বরিশালের এক ব্যক্তি পরিবার নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করতেন উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের গোহাট্টা গ্রামে। তিনি মেঘনা শিল্পাঞ্চলে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। গত ৩০ মার্চ বিকালে রাসেলের হঠাৎ পেটে ব্যাথা শুরু হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় মেডিকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এদিকে, হাসপাতালে কোন চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করেন এবং ফোনে শিশির আহমেদ নামে অর্থোপেডিক বিভাগের এক চিকিৎসক (!) কে ডেকে আনেন।

ডা. (!) শিশির রাসেলের লিভারে সমস্যা হয়েছে এবং তাকে দ্রুত অপারেশন করাতে হবে, নয়তো রোগির জীবন নিয়ে সমস্যা হবে বলে রোগীর সাথে থাকা ব্যক্তিদের জানান। তারাও দ্বিগবেদ্বিক না ভেবে অপারেশনের অনুমতি দেন।

সন্ধ্যায় অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রাতেই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠায় ডা. (!) শিশির।

পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিলে সেকানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রোগী বেশ কিছু আগেই মারাগেছেন।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শারমিন আক্তার তিথি বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে যতদূর মনে পরে, আমি সোনারগাঁয়ে যোগদানের পর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বেশ কিছু অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই।

তখন মেডিকেয়ার হাসপাতালের কোন অনুমতিপত্র পাইনি। তখন তাদেরকে অনুমতি না নিয়ে মৌখিকভাবে কার্যক্রম না চালানোর জন্য নির্দেশ দিয়ে আসছিলাম।

আসলে আমাদের ম্যাজেষ্ট্রেসি পাওয়ার না থাকায় অনেক সময় চাইলেও অনেক কিছু করতে পারিনা। এ সকল বিষয়গুলো সিভিল সার্জন অফিসই দেখে। তবে, ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মশিউর রহমান জানান, মেডিকেয়ার হাসপাতালের হালনাগাদ সনদ আছে কি-না অফিস না খুললে সঠিক বলা যাচ্ছেনা। তবে, স্বাভাবিকভাবে একজন অর্থোপেডিকের চিকিৎসক কেন লিভার অপারেশন করবে ?

আসলে পারলে কিন্তু কোন সমস্যা নাই, না পারলেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। যিনি অপারেশন করেছেন তিনি পারেন না বিধায় সমস্যা হয়েছে। পারলেতো সমস্যা হতো না।

তবে, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকা: ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা

ভুল চিকিৎসায় সোনারগাঁও মেডিকেয়ার হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু

আপডেট সময় ১০:৩৮:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

অপারেশন করার চিকিৎসকের সদন নেই। অপারেশন থিয়েটারেও নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। এছাড়া চিকিৎসকও অন্য বিভাগের। তারপরও অপারেশন করেছেন। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে রাসেল নামে এক রোগীর।

ঘটনাটি গত ৩০ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন দিবাগত রাতে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ঐতিহ্যবাহী গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড বা সোনারগাঁ সরকারি কলেজ সড়কের ডান পাশে জলিল প্লাজায় অবস্থিত “মেডিকেয়ার হাসপাতাল”এ ঘটেছে।

এ ঘটনার পর হাসপাতাল ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধাঁমাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলেও বিশ^স্ত একটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। খবরপেয়ে, ঘটনাস্থলে গেলে হাসপাতালের ভিতরে কর্মচারীদের দেখা গেলেও একাধিকবার কলিং বেল বাঁজালে এবং ডাকা-ডাকি করলেও কেউ কোন সাড়া দেয়নি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, রাসেল নামে বরিশালের এক ব্যক্তি পরিবার নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করতেন উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের গোহাট্টা গ্রামে। তিনি মেঘনা শিল্পাঞ্চলে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। গত ৩০ মার্চ বিকালে রাসেলের হঠাৎ পেটে ব্যাথা শুরু হয়। পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় মেডিকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এদিকে, হাসপাতালে কোন চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করেন এবং ফোনে শিশির আহমেদ নামে অর্থোপেডিক বিভাগের এক চিকিৎসক (!) কে ডেকে আনেন।

ডা. (!) শিশির রাসেলের লিভারে সমস্যা হয়েছে এবং তাকে দ্রুত অপারেশন করাতে হবে, নয়তো রোগির জীবন নিয়ে সমস্যা হবে বলে রোগীর সাথে থাকা ব্যক্তিদের জানান। তারাও দ্বিগবেদ্বিক না ভেবে অপারেশনের অনুমতি দেন।

সন্ধ্যায় অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রাতেই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠায় ডা. (!) শিশির।

পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিলে সেকানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রোগী বেশ কিছু আগেই মারাগেছেন।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শারমিন আক্তার তিথি বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে যতদূর মনে পরে, আমি সোনারগাঁয়ে যোগদানের পর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বেশ কিছু অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই।

তখন মেডিকেয়ার হাসপাতালের কোন অনুমতিপত্র পাইনি। তখন তাদেরকে অনুমতি না নিয়ে মৌখিকভাবে কার্যক্রম না চালানোর জন্য নির্দেশ দিয়ে আসছিলাম।

আসলে আমাদের ম্যাজেষ্ট্রেসি পাওয়ার না থাকায় অনেক সময় চাইলেও অনেক কিছু করতে পারিনা। এ সকল বিষয়গুলো সিভিল সার্জন অফিসই দেখে। তবে, ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মশিউর রহমান জানান, মেডিকেয়ার হাসপাতালের হালনাগাদ সনদ আছে কি-না অফিস না খুললে সঠিক বলা যাচ্ছেনা। তবে, স্বাভাবিকভাবে একজন অর্থোপেডিকের চিকিৎসক কেন লিভার অপারেশন করবে ?

আসলে পারলে কিন্তু কোন সমস্যা নাই, না পারলেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। যিনি অপারেশন করেছেন তিনি পারেন না বিধায় সমস্যা হয়েছে। পারলেতো সমস্যা হতো না।

তবে, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।