ঢাকা , শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

নারায়ণগঞ্জে নতুন দুর্বৃত্তচক্র গডফাদার হতে মরিয়া : রফিউর রাব্বি

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি বলেন, শেখ হাসিনা দেশে দুর্বৃত্ত, মাফিয়া, গডফাদারদের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তার নির্দেশে সাড়ে এগার বছর ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী কালীন সরকার বিচার প্রক্রিয়া আবার শুরু করলেও তাতে এখনো উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয় নি। ওসমান পরিবার হত্যা, চাঁদাবাজি, দখল, নৈরাজ্যের মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জে দুর্বিসহ পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।

আজকে তারা পালিয়ে গেলেও নতুন দুর্বিত্তচক্র আবার নারায়ণগঞ্জে গডফাদার হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এখন আবার দখল, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন করছে নিয়োগ বাণিজ্য। এ সব তদারকি করার কেউ নেই। প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারি সংস্থা নিষ্ক্রিয়।

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪২ মাস উপলক্ষে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট এ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে ঘাতক ওসমান পরিবার পালিয়ে গেল কী ভাবে, কাদের সহযোগিতায়? গত পনের বছর হত্যা লুটপাটের সাথে জড়িত থাকা ওসমানদের সহযোগী কেউই গ্রেপ্তার হয় নি, আইনের আওতায় আসেনি।

শেখ হাসিনা দেশে বিচার-ব্যবস্থাকে যে ভাবে ধ্বংস করে রেখেছে তার উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন হয় নি। তা হলে চব্বিশের এত মৃত্যু, এত আত্মদান এর ফলাফল কী? এ অভ্যুত্থানকে কোন ভাবেই ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। তিনি ত্বকী, সাগর-রুনী, তনু সহ নারায়ণগঞ্জের সকল হত্যার বিচার দাবি করেন।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায়, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগে শেখ হাসিনা ছিলেন ত্বকী হত্যার বিচারের জন্য মূল বাধা, কিন্তু এখন বাধাটা কোথায়? এখনো ওসমার পরিবারের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় বহাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে।

সকল বক্তা ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমান সহ তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান এবং সকল ঘাতকদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত অভিযোপত্র প্রদানের জন্য অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের কাছ দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো পেশ করা হয় নাই। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

আপলোডকারীর তথ্য

Rudra Kantho24

দুই নায়িকা পছন্দ করে বিপাকে কার্তিক

নারায়ণগঞ্জে নতুন দুর্বৃত্তচক্র গডফাদার হতে মরিয়া : রফিউর রাব্বি

আপডেট সময় ০৯:২৩:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি বলেন, শেখ হাসিনা দেশে দুর্বৃত্ত, মাফিয়া, গডফাদারদের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তার নির্দেশে সাড়ে এগার বছর ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী কালীন সরকার বিচার প্রক্রিয়া আবার শুরু করলেও তাতে এখনো উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয় নি। ওসমান পরিবার হত্যা, চাঁদাবাজি, দখল, নৈরাজ্যের মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জে দুর্বিসহ পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।

আজকে তারা পালিয়ে গেলেও নতুন দুর্বিত্তচক্র আবার নারায়ণগঞ্জে গডফাদার হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এখন আবার দখল, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন করছে নিয়োগ বাণিজ্য। এ সব তদারকি করার কেউ নেই। প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারি সংস্থা নিষ্ক্রিয়।

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪২ মাস উপলক্ষে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট এ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে ঘাতক ওসমান পরিবার পালিয়ে গেল কী ভাবে, কাদের সহযোগিতায়? গত পনের বছর হত্যা লুটপাটের সাথে জড়িত থাকা ওসমানদের সহযোগী কেউই গ্রেপ্তার হয় নি, আইনের আওতায় আসেনি।

শেখ হাসিনা দেশে বিচার-ব্যবস্থাকে যে ভাবে ধ্বংস করে রেখেছে তার উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন হয় নি। তা হলে চব্বিশের এত মৃত্যু, এত আত্মদান এর ফলাফল কী? এ অভ্যুত্থানকে কোন ভাবেই ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। তিনি ত্বকী, সাগর-রুনী, তনু সহ নারায়ণগঞ্জের সকল হত্যার বিচার দাবি করেন।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায়, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগে শেখ হাসিনা ছিলেন ত্বকী হত্যার বিচারের জন্য মূল বাধা, কিন্তু এখন বাধাটা কোথায়? এখনো ওসমার পরিবারের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় বহাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে।

সকল বক্তা ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমান সহ তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান এবং সকল ঘাতকদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত অভিযোপত্র প্রদানের জন্য অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের কাছ দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো পেশ করা হয় নাই। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।