ভারতের ধনকুবের ও ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি থেকে নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমেছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সরকারি এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানা গেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বকেয়া নিয়ে বিরোধের জেরে গত মাসে ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ আকস্মিকভাবে কমিয়ে দেয় আদানি পাওয়ার। ২০১৭ সালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল কোম্পানিটি।
২০০ কোটি ডলার ব্যয়ে ভারতের ঝাড়খন্ডের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করে আদানি। ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করার চুক্তি রয়েছে। সেই মতে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি দামে এতদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির আগের ১২ মাসে দেশের প্রায় ৯ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিজনিত কারণে বিদ্যুতের দাম পুনঃআলোচনা করার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের আঞ্চলিক পাওয়ার কমিটির তথ্য থেকে দেখা যায়, গত নভেম্বর মাসে গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে ৪৫০ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ রফতানি হয়েছে, যা বার্ষিক ভিত্তিতে ৩২ দশকিম ৮ শতাংশ কম। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির ক্ষেত্রে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পতন আদানির।
এদিকে বাংলাদেশে টানা ২১ মাস ধরে হ্রাস পাওয়ার পর পরপর তিন মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি ঘটেছে। গত নভেম্বরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
টানা পাঁচ মাস পতনের পর গত নভেম্বরে প্রাকৃতিক গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎশক্তি সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও টানা তৃতীয় মাসের মতো হ্রাস পেয়েছে কয়লা-চালিত বিদ্যুতের উৎপাদন।