নারায়ণগঞ্জে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে ফতুল্লার ডিএনডি বাঁধ এলাকায় জলাবদ্ধতায় পানিবন্দী হয়ে পড়েন প্রায় বিশ লক্ষ মানুষ। প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে দুর্ভোগ কমাতে নানান উদ্যোগের কথা বলা হলেও এর কোন স্থায়ী সমাধান পাননি স্থানীয়রা।
অপরিকল্পিত বসতি, কল-কারখানা স্থাপন আর পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা ফতুল্লার ডিএনডিবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ। অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় ডিএনডির নিম্ন এলাকাগুলো। আর জলাবদ্ধতার কারণে এ এলাকায় বাড়ছে ডেঙ্গুসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগ। ফলে এর স্থায়ী সমাধান চান এ অঞ্চলের বাসিন্দারা।
ফতুল্লার লালপুর এলাকার বাসিন্দা আসাদুর রহমান তুহিন বলেন, বৃষ্টি হলে এখানল চলাফেরা করার উপায় থাকে না। বৃষ্টির পরেও দিনের পর দিন সড়কে পানি জমে থাকে। পানি পচে দুর্গন্ধ বের হয়। আবার বৃষ্টির পানি নেমে গেলেও ভাঙাচোরা ও খালাখন্দে পরিণত হয় সড়কটি। কোনোভাবেই চলাচলের আর উপযোগী নয় এ সড়ক।
এদিকে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পাম্প স্টেশনের সক্ষমতা বাড়ানো আর সবুজায়নই ডিএনডি জলাবদ্ধতা সমস্যার একমাত্র সমাধান বলে জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদেরা।
ডিএনডি এলাকায় বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা না থাকায় দুই তিন মাস পরপরই ড্রেনগুলোতে ময়লা জমে আটকে যায়। এর ফলে জমে থাকা পানি সহজে বের হতে পারে না। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হলেও বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার অভাবে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই ড্রেনগুলো অচল হয়ে যায়।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ডিএনডি বাঁধ এলাকায় ৩৬টি শাখা খাল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১০টি খাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন নয়। এই ১০টি খাল সংস্কার বা পুনঃখনন করতে হলে জেলা প্রশাসনের অনুমতি ও সীমানা নিরূপণ প্রয়োজন। এসকল জটিলতার ফলে বর্তমানে ডিএনডির খালগুলো পুনরুদ্ধার করা যাচ্ছে না। এই খালগুলো পুনরুদ্ধার করা হয়ে গেলে সবগুলো শাখা খাল দিয়ে জলাবদ্ধতার পানি সহজেই শিমরাইল পাম্প হাউজের মূল খালে চলে আসতে পারবে। এতে পানি সহজেই সেচ করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও আদমজী নগরের প্রায় ৯শ মিটারের একটি খাল খনন প্রয়োজন। এই খালের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি এলাকা ও শাখা খালের সাথে মূল খালের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এর ফলে মূল খালে পানি আসছে না।
ডিএনডি’র প্রজেক্টের জন্য সাতটি পাম্প চালানোর কথা। ডিপিডিসিকে সংযোগ ফি প্রদান করা হলেও নানা জটিলতার কারণে এখনও তিনটা পাম্প সচল হয়নি। এখনও শুধুমাত্র চারটি পাম্প চলছে যা যথেষ্ট নয়।