ঢাকা , রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোরের ভয়ে পুলিশের মোটরসাইকেলে হ্যান্ডকাপ!

মোটরসাইকেল চালকদের জন্য চোর যেন এক আতঙ্কের নাম। নিজের শখের বাহনটিকে কোনোভাবেই খোয়াতে রাজি নন প্রতিটি বাইকার। তাইতো মোটরসাইকেলের জন্য নেওয়া হয় আলাদা সুরক্ষা ব্যবস্থা। কেউ ব্যবহার করে হাইড্রোলিক লক, আবার কেউবা ব্যবহার করে থাকেন জিপিএস ট্র্যাকার। তবে এবার মোটরসাইকেলের চাকায় তালার পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে আসামির হ্যান্ডকাপ?

বিষয়টি অবাক করার মতো হলেও এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন শরীয়তপুরের এক পুলিশ সদস্য। নিজের শখের মোটরসাইকেল রক্ষায় বেছে নিয়েছেন অভিনব এই পন্থা। এরইমধ্যে এ ঘটনার বেশ কিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেলটির মালিক পালং মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মাসুদ রানা। তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকার একটি বাসা বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বর্তমানে ওই এলাকার চলাচলের একমাত্র সড়কটিতে সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এতে সড়কে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই ওই পুলিশ সদস্য বাসার অদূরে মোটরসাইকেলটি রেখে বাসায় যাতায়াত করেন। আর চুরি হওয়ার আশংকায় গাড়িটির চাকায় আসামির হ্যান্ডকাপ ব্যবহার করেন তিনি। তবে তার মোটরসাইকেলের পেছনে কোনো নম্বরপ্লেট নেই। শুধু লেখা রয়েছে পুলিশ।

খান মুহাম্মদ শাহিন নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মোটরসাইকেলের চাকায় হ্যান্ডকাপ লাগানো দুটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘হাতকড়া ঝুলছে মোটরসাইকেলের হাইড্রোলিক প্লেটে।’

আর সেই পোস্টে বেশ কয়েকজন মজার মজার কমেন্টও করেছেন। কামরুজ্জামান পলাশ খান নামের এক ব্যক্তি সেখানে কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল গ্রেফতার।’

কাওসার মাহমুদ শান্ত নামের আরেক ব্যক্তি কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল যখন হত্যা মামলার আসামি।’

মোটরসাইকেলে হ্যান্ডকাপ লাগানোর বিষয়ে আইন কী বলে, জানতে চাইলে জেলা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট সহিদুল ইসলাম সজীব বলেন, ‘বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন, প্রবিধান ৩৩০ এ হাতকড়ার ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে হাতকড়া সব সময় ব্যবহার উপযোগী রাখতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য পেশাগত কাজ ব্যতীত ব্যক্তিগত কাজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদস্য মাসুদ রানা বলেন, মাঝেমধ্যেই অনেকের মোটরসাইকেল তালা ভেঙে চুরি করে নিয়ে যায় চোর। আমার বাসার সামনে কাজ চলমান থাকায় মোটরসাইকেলটি বাসায় নিতে পারি না। তাই চুরি এড়াতে মোটরসাইকেলটি হাতকড়া দিয়ে তালা মেরে রাখি।

বিষয়টি জানতে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

চোরের ভয়ে পুলিশের মোটরসাইকেলে হ্যান্ডকাপ!

আপডেট সময় ১০:০০:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪

মোটরসাইকেল চালকদের জন্য চোর যেন এক আতঙ্কের নাম। নিজের শখের বাহনটিকে কোনোভাবেই খোয়াতে রাজি নন প্রতিটি বাইকার। তাইতো মোটরসাইকেলের জন্য নেওয়া হয় আলাদা সুরক্ষা ব্যবস্থা। কেউ ব্যবহার করে হাইড্রোলিক লক, আবার কেউবা ব্যবহার করে থাকেন জিপিএস ট্র্যাকার। তবে এবার মোটরসাইকেলের চাকায় তালার পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে আসামির হ্যান্ডকাপ?

বিষয়টি অবাক করার মতো হলেও এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন শরীয়তপুরের এক পুলিশ সদস্য। নিজের শখের মোটরসাইকেল রক্ষায় বেছে নিয়েছেন অভিনব এই পন্থা। এরইমধ্যে এ ঘটনার বেশ কিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেলটির মালিক পালং মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মাসুদ রানা। তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকার একটি বাসা বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বর্তমানে ওই এলাকার চলাচলের একমাত্র সড়কটিতে সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এতে সড়কে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই ওই পুলিশ সদস্য বাসার অদূরে মোটরসাইকেলটি রেখে বাসায় যাতায়াত করেন। আর চুরি হওয়ার আশংকায় গাড়িটির চাকায় আসামির হ্যান্ডকাপ ব্যবহার করেন তিনি। তবে তার মোটরসাইকেলের পেছনে কোনো নম্বরপ্লেট নেই। শুধু লেখা রয়েছে পুলিশ।

খান মুহাম্মদ শাহিন নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মোটরসাইকেলের চাকায় হ্যান্ডকাপ লাগানো দুটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘হাতকড়া ঝুলছে মোটরসাইকেলের হাইড্রোলিক প্লেটে।’

আর সেই পোস্টে বেশ কয়েকজন মজার মজার কমেন্টও করেছেন। কামরুজ্জামান পলাশ খান নামের এক ব্যক্তি সেখানে কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল গ্রেফতার।’

কাওসার মাহমুদ শান্ত নামের আরেক ব্যক্তি কমেন্ট করেছেন, ‘মোটরসাইকেল যখন হত্যা মামলার আসামি।’

মোটরসাইকেলে হ্যান্ডকাপ লাগানোর বিষয়ে আইন কী বলে, জানতে চাইলে জেলা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট সহিদুল ইসলাম সজীব বলেন, ‘বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন, প্রবিধান ৩৩০ এ হাতকড়ার ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে হাতকড়া সব সময় ব্যবহার উপযোগী রাখতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য পেশাগত কাজ ব্যতীত ব্যক্তিগত কাজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদস্য মাসুদ রানা বলেন, মাঝেমধ্যেই অনেকের মোটরসাইকেল তালা ভেঙে চুরি করে নিয়ে যায় চোর। আমার বাসার সামনে কাজ চলমান থাকায় মোটরসাইকেলটি বাসায় নিতে পারি না। তাই চুরি এড়াতে মোটরসাইকেলটি হাতকড়া দিয়ে তালা মেরে রাখি।

বিষয়টি জানতে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।