ঢাকা , সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা নিয়ে যা বললেন শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জে পরিত্যক্ত টাউন হল থেকে জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও এমপি শামীম ওসমান। নতুন করে ইস্যু সৃষ্টি করার জন্য এই ঘটনা বিএনপির একটি গ্রুপই ম্যুরাল ভাঙার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন শামীম ওসমান।

এ সময় তিনি জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত একটি পত্র দেখিয়ে বলেন, গত ২ এপ্রিল টাউন হল কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে আমাকেসহ সব সদস্যকে ৪ এপ্রিল বৈঠকে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছিল। এই চিঠির কপি কোনো না কোনোভাবে বিএনপির হাতে পৌঁছেছে এবং প্রায় ১০ বছর আগে পরিত্যক্ত এই টাউন হলটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমনটি বুঝতে পেরে রাতের আঁধারে বিএনপির লোকজন জিয়ার ম্যুরাল ভেঙে অশান্তি সৃষ্টির পায়তারা করছে।

শামীম ওসমান বলেন, জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙতে চাইলে বহু আগেই ভাঙ্গতাম, দিনের বেলাতেই ভাঙতাম। জীবিত অবস্থায়ই জিয়াউর রহমানকে আশির দশকে নারায়ণগঞ্জে আটকে দিয়েছিলাম, সেখানে রাতের বেলা ভাঙার প্রশ্নই আসে না। এ ধরনের অশান্তির রাজনীতি করার চেষ্টা যারা করেন তাদের বলতে চাই অন্য এলাকায় গিয়ে এসব কাজ করুন।

শুক্রবার বিকাল সোয়া ৩টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন শামীম ওসমান।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির কয়েকজন এই ঘটনায় আমাকে নাকি দায়ী করেছে বলে দেখলাম পত্রিকায়। তারা নাকি ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের জনগণ ও আমি তাদের আল্টিমেটামের শক্তি দেখতে চাই। আমার বিরুদ্ধে অশালীন কথাবার্তা বলে আবার আমার লোকজনকে ফোন করে তারা বলেছে, ভাইকে বইলেন মাইন্ড করতে না। ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বললে সেন্ট্রালে আমাদের দাম বাড়ে। ভাই মানে আমি শামীম ওসমান। আমার বিরুদ্ধে কথা বলে বড় নেতা হতে পারলে হোক। আমার আপত্তি নেই। কারা এসব কথা বলেছে আমি তাও জানি না। কিন্তু তাদের নিয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির একটি কর্মসূচিতে গোলাগুলি হয়েছিল। পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছিল। যারা আমাকে নিয়ে অশালীন কথা বলেছে তাদের মধ্যে একজন ছাত্রদলের পলাতক সাবেক নেতা জাকির খানের ঠিকানা র‌্যাব বা পুলিশর কাছে দিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল তো থাকারই কথা না। পঞ্চম সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। ২০১৪ সালেই এই টাউন হল পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজউক এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

শর্ষের ভেতর যেমন ভুত থাকে, প্রশাসনের ভেতরেও তেমন ভুত আছে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, এই অতি আওয়ামী প্রশাসনের কারণে গত ১০ বছরেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জের সঠিক ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, আমি ১৯৬৬ সালের ইত্তেফাক পত্রিকার কাটিং নিয়ে এসেছি। যেন পরবর্তী প্রজন্ম এটা জানে। আমি সংসদের ভাষণে বলেছিলাম নারায়ণগঞ্জের টাউনহল স্বাধীনতার অন্যতম স্মৃতিস্তম্ভ। এখানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার সনদ ৬ দফার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন আমার বাবা প্রয়াত একেএম সামসুজ্জোহা। অথচ কিছুদিন আগে কিছু এক্সট্রিম বামপন্থি লোকেরা এই ইতিহাসও বিকৃত করার অপচেষ্টা করেছে। আমি এই প্রেস ক্লাবে বসেই ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম কিন্তু তারা আর কোনো কথা বলেনি। এখানে জামায়াত ডান বা বাম নেই। এরা একটা গ্রুপ। ওরা নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করতে চায়। এটা আমাদের কর্তব্য স্মৃতি রক্ষা করা। এখানে কেউ বাধা দিলে আমরা তাদের প্রতিহত করব, মানুষ প্রতিহত করবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

কামাল হোসাইন

হ্যালো আমি কামাল হোসাইন, আমি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। ২০১৭ সাল থেকে এই পত্রিকার সাথে কাজ করছি। এভাবে এখানে আপনার প্রতিনিধিদের সম্পর্কে কিছু লিখতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা নিয়ে যা বললেন শামীম ওসমান

আপডেট সময় ০৩:৫২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে পরিত্যক্ত টাউন হল থেকে জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও এমপি শামীম ওসমান। নতুন করে ইস্যু সৃষ্টি করার জন্য এই ঘটনা বিএনপির একটি গ্রুপই ম্যুরাল ভাঙার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন শামীম ওসমান।

এ সময় তিনি জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত একটি পত্র দেখিয়ে বলেন, গত ২ এপ্রিল টাউন হল কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে আমাকেসহ সব সদস্যকে ৪ এপ্রিল বৈঠকে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছিল। এই চিঠির কপি কোনো না কোনোভাবে বিএনপির হাতে পৌঁছেছে এবং প্রায় ১০ বছর আগে পরিত্যক্ত এই টাউন হলটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমনটি বুঝতে পেরে রাতের আঁধারে বিএনপির লোকজন জিয়ার ম্যুরাল ভেঙে অশান্তি সৃষ্টির পায়তারা করছে।

শামীম ওসমান বলেন, জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙতে চাইলে বহু আগেই ভাঙ্গতাম, দিনের বেলাতেই ভাঙতাম। জীবিত অবস্থায়ই জিয়াউর রহমানকে আশির দশকে নারায়ণগঞ্জে আটকে দিয়েছিলাম, সেখানে রাতের বেলা ভাঙার প্রশ্নই আসে না। এ ধরনের অশান্তির রাজনীতি করার চেষ্টা যারা করেন তাদের বলতে চাই অন্য এলাকায় গিয়ে এসব কাজ করুন।

শুক্রবার বিকাল সোয়া ৩টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন শামীম ওসমান।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির কয়েকজন এই ঘটনায় আমাকে নাকি দায়ী করেছে বলে দেখলাম পত্রিকায়। তারা নাকি ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের জনগণ ও আমি তাদের আল্টিমেটামের শক্তি দেখতে চাই। আমার বিরুদ্ধে অশালীন কথাবার্তা বলে আবার আমার লোকজনকে ফোন করে তারা বলেছে, ভাইকে বইলেন মাইন্ড করতে না। ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বললে সেন্ট্রালে আমাদের দাম বাড়ে। ভাই মানে আমি শামীম ওসমান। আমার বিরুদ্ধে কথা বলে বড় নেতা হতে পারলে হোক। আমার আপত্তি নেই। কারা এসব কথা বলেছে আমি তাও জানি না। কিন্তু তাদের নিয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির একটি কর্মসূচিতে গোলাগুলি হয়েছিল। পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছিল। যারা আমাকে নিয়ে অশালীন কথা বলেছে তাদের মধ্যে একজন ছাত্রদলের পলাতক সাবেক নেতা জাকির খানের ঠিকানা র‌্যাব বা পুলিশর কাছে দিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল তো থাকারই কথা না। পঞ্চম সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। ২০১৪ সালেই এই টাউন হল পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজউক এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

শর্ষের ভেতর যেমন ভুত থাকে, প্রশাসনের ভেতরেও তেমন ভুত আছে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, এই অতি আওয়ামী প্রশাসনের কারণে গত ১০ বছরেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জের সঠিক ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, আমি ১৯৬৬ সালের ইত্তেফাক পত্রিকার কাটিং নিয়ে এসেছি। যেন পরবর্তী প্রজন্ম এটা জানে। আমি সংসদের ভাষণে বলেছিলাম নারায়ণগঞ্জের টাউনহল স্বাধীনতার অন্যতম স্মৃতিস্তম্ভ। এখানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার সনদ ৬ দফার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন আমার বাবা প্রয়াত একেএম সামসুজ্জোহা। অথচ কিছুদিন আগে কিছু এক্সট্রিম বামপন্থি লোকেরা এই ইতিহাসও বিকৃত করার অপচেষ্টা করেছে। আমি এই প্রেস ক্লাবে বসেই ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম কিন্তু তারা আর কোনো কথা বলেনি। এখানে জামায়াত ডান বা বাম নেই। এরা একটা গ্রুপ। ওরা নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করতে চায়। এটা আমাদের কর্তব্য স্মৃতি রক্ষা করা। এখানে কেউ বাধা দিলে আমরা তাদের প্রতিহত করব, মানুষ প্রতিহত করবে।